ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা
কি পোস্টের টাইটেল দেখেই হতবাগ হয়ে যাচ্ছেন? ভাবছেন ঝিনুক আমাদের মানব জীবনে কাজে আসবে কি না? ঝিনুক কি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারবে? আরো জানতে চাচ্ছেন যে কিভাবে ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষ করবেন? আপনার সকল প্রশ্নের সমাধান নিয়ে আজকে আমরা চলে আসলাম এই আকর্ষণীয় পোস্ট নিয়ে। আশা করি আপনারা সকলে অনেক উপকৃত হবেন এবং অন্যকেও বিষয়টি জানতে সাহায্য করবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক-
পোস্ট সূচিপত্রঃ ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা
ঝিনুক কি? -ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা
ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা পোস্টের প্রথমেই আমরা জানব যে ঝিনুক কি? কেমন দেখতে? এদের জীবন যাপন কেমন? এরা কেমন ধরনের খাবার খায়? ঝিনুক হলো একটি দুই খোলক বিশিষ্ট প্রানী। এরা সাধারণত লবণাক্ত জলে বাস করে। বিশেষ করে সমুদ্রে বাস করে। আর যে সমস্ত পুকুরের পানি একটু লবণাক্ত সেই পুকুরে ঝিনুক বাস করে থাকে। এদের গোটা শরীর দুইটি চ্যাপ্টা খোলক দিয়ে ঢাকা থাকে। এই চ্যাপ্টা খোলকটি থেকেই চুন তৈরি হয়ে থাকে। এদের একটি অংশ পানি দিয়ে ঢাকা থাকে।
আরো পড়ুনঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম
সমস্ত প্রজাতির ঝিনুকই প্ল্যাঙ্কটন বা শৈবাল খেয়ে থাকে। এদের অন্য কোনো খাবার চলে না। এই ঝিনুকে অনেক ধরনের উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। এটির মধ্যে রয়েছে জিঙ্ক, লৌহ, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, ভিটামিন এ ও ভিটামিন বি১২ এর মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। তবে এই ঝিনুকের মধ্যে খাদ্যশক্তি কম আছে। একসাথে ১২টি ঝিনুক খেলে প্রায় ১১০ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া সম্ভব।
ঝিনুকের বৈশিষ্ট্য
- ঝিনুকের দেহ একেবারে নরম, এটি দেখতে অনেকটা ছুরির মতো দেখতে।
- এটির দুইপাশে চ্যাপ্টা খোলক দ্বারা আবৃত এবং একটি আরেকটির সাথে সম্পৃক্ত।
- ঝিনুকের গোড়ার দিকে একটু গোলাকার কিন্তু সামনের দিকে কিছুটা ছুরির মতো সুচালো।
- আবার ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে ঝিনুকের খোলের উপরে বৃদ্ধি রেখার সারি স্পষ্ট ভাবে দেখা যায়।
ঝিনুকের উপকারিতা
ঝিনুকের অপকারের চেয়ে উপকারই বেশি আছে। এই ঝিনুক বর্তমানে মানব শরীরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ঝিনুক অনেক ভাবেই খাওয়া যায়। আপনি চাইলেই এটি সিদ্ধ করে, রান্না করে, পুড়িয়ে বা কাঁচাও খেতে পারেন। আপনি যেভাবেই খান না কেন আপনার উপকার হবেই। এই ঝিনুক খেলে আপনার যে উপকার গুলো হবে তা নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
প্রোটিনঃ ঝিনুকে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে। আপনি যদি নিয়ম করে প্রতিদিন এক কাপ করে ঝিনুক আপনার খাদ্য তালিকায় রাখেন এবং নিয়ম করে খান তাহলে আপনার দৈনন্দিন জীবনে যে পরিমাণ প্রোটিন দরকার তার চাহিদা পুরন হয়ে যাবে।
হাড় মজবুত করেঃ ঝিনুকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা আপনার শরীরের হাড়ের ভেতরে ক্যালসিয়াম বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে এবং আপনার হাড় হবে অনেক মজবুত। সেই সাথে আপনার হাড়ের টিস্যুগুলো, আপনার দাঁতের মাড়ি শক্ত হবে। তাই আপনি এই ঝিনুক নিয়মিত খেতে পারেন। এই ঝিনুকের সবচেয়ে বড় গুণ হলো এটি খেলে ওস্টিওআরথাইটিস রোগের সমস্যা দূর হয়। আপনার যদি বাতের ব্যাথা থেকে থাকে তাহলে আপনি সবুজ ঝিনুক খেতে পারেন কারণ এই সবুজ ঝিনুকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে।
ভিটামিনঃ ঝিনুকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন A রয়েছে। আমরা জানি যে ভিটামিন এ কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন এ এর ফলে আপনার চোখের জ্যোতি বাড়াতে সাহায্য করে, শরীর বিকাশে সাহায্য করে। আপনার দাঁত,ত্বক, কোষ অ অস্থি গঠনে সহায়তা করে। এই ঝিনুক খেলে কোনো প্রকার সংক্রামক রোগ আপনার শরীরে প্রবেশ করতে পারবে না। আপনার শরীরে যে পরিমাণ লৌহ থাকার দরকার সেই পরিমাণ লৌহ আপনার শরীরে থাকবে। ফলে আপনার শরীরে রক্ত স্বল্পতা দেখা দিবে না। এছাড়াও আপনার ত্বকের শুষ্কতা দূর করবে, এবং আপনার সবচেয়ে বড় যে উপকারটি হবে তা হলো আপনাকে ক্যান্সার, টিউমার এর হাত থেকে রক্ষা করবে ও আপনার লিভার, যকৃৎ, নাকের শ্লেষঝিল্লি সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে আমাদের শরীরে ঝিনুক কতটা উপকারী।
আরো পড়ুনঃ ওয়ার্ক আপ জব বাংলাদেশ
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ ঝিনুক আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। এর ফলে আপনার শরীরে কোনো প্রকার ভাইরাস প্রবেশ করেতে পারে না। এবং আপনার যদি ছোট খাট রোগ বা অসুখ হয় তাহলে আপনি তা সহজেই কাটিয়ে উঠতে পারবেন। বিশেষ করে যারা অ্যাজমা রোগী, তাদের জন্য এই ঝিনুক খুবই উপকারী।
ঝিনুক খাওয়ার নিয়ম
আপনি একটু আগে ঝিনুক সম্পর্কে অনেক তথ্য জানলাম। এবার আমরা জানব যে কিভাবে ঝিনুক খাওয়া যায়। ঝিনুক খাওয়ার সেরকম কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। শুধু মাত্র আপনাকে জানতে হবে যে কিভাবে এটিকে খাবারের জন্য প্রস্তুত করবেন এবং কিভাবে খেলে আপনার খেতে ভালো লাগবে। তাহলে চলুন দেখি কিভাবে ঝিনুককে খাওয়ার উপযোগী করে তোলা যায়। আপনি ঝিনুক খাওয়ার আগে আপনাকে ঝিনুকটি ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
প্রথমে আপনাকে ঝিনুক একটি বড় হাড়িতে নিয়ে তার মধ্যে পানি দিয়ে ভালো করে ফুটাতে হবে। পানি ফুটানোর পর ঝিনুকের খোল থেকে মাংস আলাদা করে নিতে হবে এবং মাংসর ভেতর থেকে সমস্ত জীবাণু বা বিষ্ঠা বের করে ফেলে দিতে হবে। তারপর এটিকে আপনি মাংসর মতো ভালো করে মশলা দিয়ে রান্না করে খেতে পারেন। আবার কেউ চাইলে ঝিনুকের সাথে পরিমাণ মতো লবণ মিশিয়ে সেদ্ধ করে খেতে পারেন। এছাড়াও আপনি তেলে একটু কড়া করে ভেজে খেতে পারেন। অনেকে আবার রোস্ট তৈরি করেও খায় আবার অনেকে ঝিনুক পুড়িয়েও খায়। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে ঝিনুক কতভাবে খাওয়া যায়। আপনার যেমন ইচ্ছা বা যেমন খুশি, আপনার যেভাবে ইচ্ছা আপনি তেমন করেই এটি খেতে পারবেন। তবে যাদের অসুখ রয়েছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঝিনুক খেতে পারেন।
ঝিনুকের চুন খাওয়া যাবে কি না?
ঝিনুকের চুন অনেক কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যদিও চুন মন্দ খাদ্যর অন্তর্ভুক্ত কিন্তু বিশেষ করে যারা পান খায় তাদের জন্য চুন অনেক প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। তাদের চুন ছাড়া পান খাওয়া অসম্ভব ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়। তবে চুন যেহেতু ঝিনুকের খোল থেকে তৈরি হয় এবং এটিতে অনেক ধরণের রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা শরীরের জন্য খবই ক্ষতিকর।
চুন আপনি খেতে পারবেন তবে বেশি পরিমাণ চুন খাওয়া যাবে না। কারণ এটি আপনার শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাই চুন খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষ করার পদ্ধতি
ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা পোস্টে আপনি কিভাবে ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করবেন এবং পুকুরে ঝিনুক চাষ করে আপনি কিভাবে লাভবান হতে পারবেন। ঝিনুক চাষ করার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে ঝিনুকের গঠন সম্পর্কে। কোন ঝিনুক মুক্তা চাষের জন্য উপযোগী তা বুঝতে হবে। তাহলে আপনি ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষ করে সফলতা অর্জন করতে পারবেন। তাহলে চলুন আগে আমরা জেনে নিই ঝিনুকের গঠন সম্পর্কে।
ঝিনুকের গঠনঃ প্রতিটি ঝিনুক সাধারণত দুইটি খোলক দিয়ে আবৃত থাকে। এই দুইটি খোলক অনেকটা ছুরির মতো দেখতে হয়। এদের মধ্যে কপাট, ফুলকা, মুখ, হৃদযন্ত্র, পাকস্থলী, মলদ্বার, মুখ থাকে। এদের শরীরে একটি ছাঁকনির মতো থাকে যার মাধ্যমে তারা খাবার তাদের মুখে খাবার গ্রহণ করে।
এবার আসুন আলোচনা করি যে কিভাবে আপনি ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষ করবেন। ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষের জন্য আপনাকে প্রথমে একটি উপযুক্ত পুকুর নির্বাচন করতে হবে। উপযুক্ত পুকুর না হলে ঝিনুক চাষ করা সম্ভব না। পুকুর নির্বাচন করা হয়ে গেলে এবার আপনাকে ঝিনুক সংগ্রহ করতে হবে। আপনি চাইলে খাল, বিল বা অন্য কোথাও থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করে চাষ করতে পারেন। আবার চাইলে মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট থেকেও ঝিনুক সংগ্রহ করে চাষাবাদ শুরু করতে পারেন। তবে আমি মনে করি আপনি যদি মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করেন তাহলে আপনি আপনার চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত ঝিনুক পাবেন এছাড়াও আপনি এর পাশাপাশি ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষ করার একটি প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। এতে করে আপনার সফলতা অনেকাংশেই বেড়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ স্মার্ট ফোনে কিভাবে কনফারেন্স কল করবেন?
ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন ও ঝিনুক সংগ্রহ করা হয়ে গেলে আপনাকে পুকুরে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কয়েকটি খুঁটি লাগাতে হবে। সেই খুঁটিতে জাল বাঁধতে হবে। জাল বাঁধা হয়ে গেলে ঝিনুক একটু পর পর একটি করে ঝিনুক রেখে দিতে হবে। জাল পানির দুই থেকে তিন ফুট নিচে বাঁধতে হবে। একসাথে আপনি ৬ থেকে ৭ টি ঝিনুক রাখতে পারেন। সাত থেকে আট মাস পর থেকে আপনি ঝিনুক থেকে মুক্তা সংগ্রহ করতে পারবেন। আমাদের দেশে অনেক মানুষ আছে যারা ঝিনুক চাষ করে অনেক লাভবান হচ্ছেন। আপনি চাইলেই আপনার বাসা বাড়ির ছাদেও এই ঝিনুক চাষ করে মুক্তা সংগ্রহ করতে পারেন।
ঝিনুকের মুক্তা প্রজননঃ ঝিনুক পানিতে থাকা অবস্থায় তাদের খোলক দুইটি খোলা রাখে। যখন তার মধ্যে কোনো জীবাণু প্রবেশ করে তখন ঝিনুকের দুইটি খোলক বন্ধ হয়ে যায়। ঝিনুক তখন তাদের ছাকনির সাহায্যে সেখান থেকে খাবার গ্রহণ করে এবং বাকি গুলো বাইরেই থেকে যায়। সেগুলোই আস্তে আস্তে একসাথে হয়ে মুক্তার আকার ধারণ করে। সেই মুক্তাই চাষিরা বাজারজাত করে অর্থ আয় করে থাকেন। এই মুক্তা দিয়ে অনেক ধরণের অলঙ্কার তৈরি হয় যার জন্য বর্তমান বাজারে মুক্তার চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঝিনুকের পোনা আহরণঃ ঝিনুক চাষের পূর্বে আমাদের ভালোভাবে জানা দরকার যে কিভাবে ঝিনুকের পোনা আহরণ করব। ঝিনুকের পোনা আহরণের জন্য আপনাকে হিসাব রাখতে হবে ঝিনুকের বয়স সম্পর্কে। ঝিনুকের বয়স যখন চার থেকে পাঁচ মাস হবে তখন আপনাকে আপনার নির্বাচিত পুকুরের পানি শুকিয়ে আবার পুনরায় পানি দিয়ে আহরণ করা ঝিনুকের পোনা নতুনভাবে স্থানান্তর করতে হবে। আপনার পুকুরের উপর নির্ভর করে প্রতি শতাংশে আপনাকে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ টি ঝিনুক মজুত করতে হবে। তাহলে দেখবেন এই ৮০ থেকে ১০০ টি ঝিনুকই বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি শতাংশে ৪৫০ থেকে ৫০০ টি ঝিনুকে পরিণত হবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে ঝিনুকের পোনা আহরণ করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
ঝিনুক চাষের জন্য যেভাবে নির্বাচন করবেন
আপনি যেহেতু ঝিনুক চাষের জন্য সংগ্রহ করবেন সেহেতু আপনাকে দেখে শুনে ভালো মানের ঝিনুক নির্বাচন করতে হবে। তা না হলে আপনি ঝিনুক চাষ করে খুব ভালো একটা ফলাফল পাবেন না। ঝিনুক নির্বাচনের সময় প্রথমে আপনাকে দেখতে হবে যে ঝিনুকে কোনো প্রকার আঘাত আছে কি না। আঘাত থাকলে ঐ ঝিনুক নেওয়া যাবে না। কারণ আপনি যদি ঐ ঝিনুক চাষের জন্য নির্বাচন করেন তাহলে সেই ঝিনুক কিছুদিনের মধ্যে মারা যাবে। এতে করে আপনি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। এজন্য সঠিক ঝিনুক নির্বাচন করা উচিৎ। দ্বিতীয়ত আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে ঝিনুক অন্যান্য সময়ের চেয়ে বড় আছে কি না। তারপর খয়াল করতে হবে যে ঝিনুকের বৃদ্ধি পাওয়ার নতুন কোনো রেখা আছে কি না। এছাড়াও ঝিনুক নির্বাচনের সময় আপনাকে যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে তা হলো যখন ঝিনুকের খোল দুইটা খোলা থাকবে তখন যদি ঝিনুককে স্পর্শ করেন তাহলে ঝিনুকটি তৎক্ষণাৎ খোল দুইটি বন্ধ করে দিবে অর্থাৎ ঝিনুক সংবেদনশীল হতে হবে এবং যখন ঝিনুক তার শরীর থেকে পানি ছেড়ে দিবে তখন ঝিনুক আগের তুলনাই শক্তিশালী হয়ে যাবে।
ঝিনুক নির্বাচনের সময় আপনাকে উপরে উল্লিখিত বিষয়গুলো মাথায় রেখে চাষের উপযোগী ঝিনুক নির্বাচন করতে হবে। যদি আপনি চাষের জন্য উপযোগী ঝিনুক নির্বাচন করতে না পারেন তাহলে আপনি সফলভাবে ঝিনুক চাষ করতে পারবেন না এবং আপনি কাজের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলবেন ফলে কাজে মন বসবে না আর ক্ষতির সন্মুখিন হতে হবে। এজন্য প্রত্যেকটি বিষয় মাথায় রেখে আপনাকে ঝিনুক নির্বাচন করতে হবে।
ঝিনুক চাষের গুরুত্ব
বর্তমানে ঝিনুক চাষের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। কারণ ঝিনুক বর্তমানে অনেক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। যেমন- আপনি যদি আপনার পুকুর পরিষ্কার রাখতে চান তাহলে আপনি আপনার পুকুরে ঝিনুক ছাড়েন তাহলে দেখবেন যে আপনার পুকুরের পানি কয়েকদিনের মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে। কারণ ঝিনুক পানির মধ্যে থাকা রোগ জীবাণু খেয়ে বেঁচে থাকে। অর্থাৎ এক কথায় ঝিনুক জলজ পরিবেশকে পরিস্কার রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও খামারের পোলট্রি, হাঁস, মাছের খাবার হিসেবেও ঝিনুকের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
ঝিনুকের খোল দিয়ে অনেক শৌখিন জিনিসপত্র তৈরি করা যায়। আবার কাপড়ের বোতাম হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এই ঝিনুকের খোল দিয়ে চুনও তৈরি করা যায়। যা বর্তমানে অনেক চাহিদা সম্পন্ন একটি পণ্য। ঝিনুক চাষ করে মুক্তা উৎপন্ন করা যায়। তারমানে বুঝতেই পারছেন যে ঝিনুকের গুরুত্ব কতখানি রয়েছে। আপনি যদি ঝিনুক চাষে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি যত দ্রুত সম্ভব ঝিনুক চাষ শুরু করতে পারেন।
ঝিনুকের অপকারিতা
এতক্ষণ আমরা ঝিনুক সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম,বুঝলাম যে ঝিনুক খেলে আমাদের কি কি উপকার হয়। ঝিনুকের অনেক গুনাগুন থাকলেও এর কিছু অপকারিতা আছে। এই অপকারিতা গুলো আমাদের জানা থাকলে অনেক রোগের হাত থেকে আমরা রক্ষা পাব। তাহলে চলুন ঝিনুকের অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই-
আমরা জানি যে ঝিনুক লবণাক্ত পানি ছাড়া বাঁচতে পারে না। আর ঝিনুকের প্রধান খাবার হলো পানির তলদেশে যে শৈবাল থাকে সেগুলো। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন যে, যে পুকুরে ঝিনুক থাকে সে পুকুরের পানি পরিষ্কার থাকে। অর্থাৎ ঝিনুক পানির মধ্যে থাকা সকল জীবাণু খেয়ে নিজের মধ্যে রাখে। এজন্য যারা ঝিনুকের কাঁচা মাংস খেতে পছন্দ করেন তাদেরকে বলব এটি যত দ্রুত সম্ভব পরিহার করতে। তা না হলে ঝিনুকের মধ্যে থাকা সকল জিবাণু আপনার শরীরের মধ্যে প্রবেশ করবে আর আপনি জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
বিশেষ করে যারা গর্ভবতী মহিলা তাদেরকে এ ব্যপারে আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কারণ ঝিনুক ভালো করে পরিষ্কার করে না খায় তাহলে তাদের জন্য তাদের বাচ্চার অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। এজন্য ঝিনুক খাওয়ার পূর্বে ভালো করে পরিষ্কার করে, রান্না করে খেতে হবে। অথবা ঝিনুক যেহেতু অনেক উপকারী একটি খাদ্য সেহেতু আপনি কোনো ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে পারেন। তাহলে আপনি আপনার স্বাস্থ্য নিয়ে একদম নিশ্চিন্তে থাকবেন।
শেষ কথাঃ ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা
আমাদের এই "ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা" আর্টিকেল অনেক ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি ঝিনুক কিভাবে খাবেন? ঝিনুক খেলে কি কি উপকার পাবেন? ঝিনুক চাষ করে কিভাবে অর্থ উপার্জন করবেন তার সমস্ত কিছুই এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন।
আপনার যদি এই আর্টিকেলের বিষয়ে কোনো ধরণের মতামত থেকে থাকে তাহলে তা নিচে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। এবং আরো নতুন তথ্য, নতুন বিষয়ে সবার আগে জানতে "PM DREAM IT" এর সাথেই থাকুন।
পি এম ড্রিম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url