ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় সেক্টর কোনটি এবং কেন?
ফ্রিল্যান্সিং কি?
ফ্রিল্যান্সিং বলতে সাধারণত নিজের ইচ্ছা স্বাধীন মতো কাজ করাকে বোঝায়। অর্থাৎ আপনার কাজ আপনি কখন করবেন সেটা সমস্তই আপনার উপর নির্ভর করবে। আমরা আমাদের রিয়েল লাইফে প্রায় সময় দেখি যারা কোনো ব্যবসা করে তারা কারও গোলামি করে না। তাদের মন চাইলে তারা যতক্ষণ খুশি ব্যবসা করে আবার মন না চাইলে ব্যবসা বন্ধ রাখে। ফ্রিলান্সিং ও ঠিক তেমনি। আপনি আপনার ক্লাইন্ট এর কাছ থেকে কাজ নিবেন, তার সাথে চুক্তি করবেন কত টাকা নিবেন, কবে কাজটা জমা দিবেন ইত্যাদি।
আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে ফ্রিল্যান্সিং এ বাস্তবে যেভাবে কাজ হয় সেটাই আলোচনা করি তাহলে আপনারা সহজেই একবারে বুঝতে পারবেন। ফ্রিলান্সিং হলো একটি মাধ্যম যেখানে কাজ দেওয়া নেওয়া হয়। ফ্রিলান্সিং মার্কেটপ্লেসে যারা ফ্রিলান্সার তারা ক্লাইন্টদের কাছ থেকে কাজ নেয়। মনে করেন আমি ক্লাইন্ট আর আপনি ফ্রিল্যান্সার। আমি প্রথমে একটি কাজের অফার পোস্ট করলাম, সেখানে অনেক জন ফ্রিলান্সার কাজের জন্য আবেদন করলো। তাদের মধ্যে থেকে আমি আপনাকে বেছে নিলাম এবং কাজটি দিলাম। কাজটি কতো টাকায় করে দিবেন, কবে জমা দিবেন এসব কিছু আমার সাথে চুক্তি করে নিবেন। আপনি মনে করেন যে আমি আপনাকে সোমবার রাত্রি ১০ঃ০০টায় কাজ দিলাম এবং বললাম যে কাজটি শেষ করে তিনদিন পর অর্থাৎ বুধবার রাত্রি ১০ঃ০০ টায় আমাকে জমা দিবেন। এখন কাজটি নেওয়ার পর আপনার কাছে তিনদিন সময় আছে। এই তিনদিনের মধ্যে আপনি কখন কাজ করবেন,দিনে করবেন নাকি রাত্রে করবেন নাকি একদিন পরে শুরু করবেন সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনদিন পর আমি কাজ বুঝে পাইলেই হলো। আশা করি বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।ফ্রিল্যান্সিং এ এভাবেই কাজ দেওয়া-নেওয়া হয়ে থাকে।
আপনি ক্লাইন্ট হবেন নাকি ফ্রিল্যান্সার হবেন?
আমার আপনার মতো মানুষ। যারা কাজ দেয় তাদেরকে ক্লাইন্ট বলে এবং যারা কাজ করে দেই তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বলে। প্রথম কথা হলো আপনি যদি কনো বড় ধরনের ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন, আপনার হাতে যদি আপনার নিজের কাজ করার মতো সময় না থাকে, তাহলে আপনার কাজ করানোর জন্য অন্য মানুষের প্রয়োজন। যাকে আপনি একটি নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে কাজ করিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করছেন, তাহলে আপনি ক্লাইন্ট হতে পারেন। আর আপনি যদি বড় কোনো ব্যবসায়ী না হোন। আপনার কাছে যদি তেমন কোনো অর্থ না থেকে থাকে তাহলে আমি মনে করি আপনার জন্য ফ্রিল্যান্সার হওয়াটাই উত্তম হবে। কারণ আপনি যদি ফ্রিল্যান্সার হন তাহলে আপনি অন্যের কাছ থেকে কাজ নিতে পারবেন, করতে পারবেন এবং এক সময়ে আপনি একটি এজেন্সি খুলতে সক্ষম হবেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর সেক্টর কোনগুলো ?
ফ্রিল্যান্সিং এর সেক্টর অনেকগুলো রয়েছে যার মধ্য দিয়ে মানুষ লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে। ফ্রিল্যান্সিং এর প্রধান সেক্টর হলো ৩টি।
- ওয়েব/অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ডিজিটাল মার্কেটিং
বিশ্বে যা কিছু ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ আছে তার সবই এই তিন সেক্টরের মধ্যে পড়ে। এর বাইরে আর কোনো কাজ নাই।
ফ্রিল্যান্সিং এ কোন সেক্টরে কোন কোন কাজ করা হয়?
- ওয়েব/অ্যাপ ডেভেলপমেন্টঃ একটি ওয়েবসাইট বা অ্যাপস তৈরির সকল কাজগুলোকে ওয়েব/অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট বলে। বর্তমান বাজারে এই কাজের চাহিদা প্রচুর। এই কাজের মাধ্যমে আপনি একটি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার যেমন ইচ্ছা তেমন ডিজাইন করতে পারবেন। সহজ কথায় আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে যেমন নির্দেশনা দিবেন ওয়েবসাইট তেমনি কাজ করবে।
- গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ এর নামটি শুনে আশা করি বুঝতেই পারছেন যে কোন কোন কাজ এর মধ্যে পড়ে। এর মধ্যে যত রকম ব্যানার ডিজাইন, বিজনেস কার্ড ডিজাইন, লগো ডিজাইন, কাভার পেজ ডিজাইন ইত্যাদি। অর্থাৎ পৃথিবীতে যতরকম নকশা রয়েছে তার সমস্ত কিছুই এই গ্রাফিক্স ডিজাইন এর মধ্যে পড়ে।
- ডিজিটাল মার্কেটিংঃ এই ডিজিটাল মার্কেটিং হলো ফ্রিল্যান্সিং জগতের সবচেয়ে বড় সেক্টর। বিশ্বের যত রকম পণ্য, ওয়েবসাইট, অ্যাপ, ভিডিও, অডিও, যা কিছু আছে সেগুলো ভোক্তার নিকট পোঁছানোর জন্য যত রকম কৌশল অবলম্বন করা হয় সেগুলোকেই মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। বর্তমানে এর চাহিদাও অনেক বেশি।
ফ্রিল্যান্সিং জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় সেক্টর কোনটি এবং কেন?
ফ্রিল্যান্সিং জগতে আমার কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় সেক্টর হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে কোনো পণ্য বা সেবা ভোক্তাদের নিকট পৌঁছানোর জন্য যেগুলো পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় সেগুলোকেই বোঝায়। যেমন- ফেসবুক মার্কেটিং, পিন্টারেস্ট মার্কেটিং, টুইটার মার্কেটিং, ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং, ইউটিউব মার্কেটিং, লিংকডিন মার্কেটিং ইত্যাদি। এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাদ্ধমেই মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং করা হয়ে থাকে। যেগুলো কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং আমার কাছে জনপ্রিয় তা হলো-
- ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টর বড় হলেও এটি তুলনামূলক ভাবে অন্যান্য সেক্টরের চেয়ে সহজ।
- এটি শিখতে সময় কম লাগে।
- এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাদ্ধ্যমে সবচেয়ে কম সময়ে ইনকাম শুরু হয়।
- বর্তমানে মানুষ তাদের ব্যক্তিগত ব্যবসা, ওয়েবসাইট, প্রতিষ্ঠান, পণ্য ইত্যাদি সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পৌছানোর জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েছে যার জন্য এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা বর্তমানে অনেক বেশি।
- এই ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রী ও পেইড দুই ভাবেই করা যায়।
- অন্যান্য সেক্টরের থেকে এই সেক্টরে একটু বেশি টাকা ইনকাম করা সম্ভব। ডিজিটাল মার্কেটিং এর সকল কাজের প্রায়ই ৮০% কাজই আপনার হাতে থাকা স্মার্ট ফোন দিয়ে করা সম্ভব।
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এ অনেক কোড জানতে হয় কিন্তু এই ডিজিটাল মার্কেটিং এ হাতে গোনা কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করলেই হয়।
- এই ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে দিনে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা সময় দিলেই সফলতা অর্জন করা যায়।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে, কেন আমার কাছে ডিজিটাল মার্কেটিং এত বেশি জনপ্রিয়। আপনি যদি এই ফ্রিল্যান্সিং জগতে একেবারে নতুন হয়ে থাকেন। তাহলে আমি মনে করি আপনার জন্য এই ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরটিই সবচেয়ে উত্তম পছন্দ হবে। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে আরও অনেক কিছু জানতে চান তাহলে আমদের "PM DREAM IT" এর সাথেই থাকুন। কারণ আমাদের এই ওয়েবসাইটে একের পর এক ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক আর্টিকেল প্রকাশ করা হবে যা আপনি পরে অনেক উপকৃত হবেন।
পি এম ড্রিম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url